২০২৫ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি ঘোষণা করেছে দুই বছরের মেয়াদি শিক্ষাবৃত্তি। এই বৃত্তির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে ২,৫০০ টাকা করে মোট ৬০,০০০ টাকা পাবে। এ ছাড়াও প্রতিবছর ২,৫০০ টাকা পাঠ্য উপকরণ কেনার জন্য এবং ১,০০০ টাকা পোশাকের জন্য অতিরিক্ত অনুদান দেওয়া হবে। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীরা দুই বছরে সর্বমোট ৬৬,০০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পাবেন।
আবেদনের যোগ্যতা ও শর্তাবলি
এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। সিটি করপোরেশন এবং জেলা শহরের স্কুল থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অবশ্যই জিপিএ ৫ পেতে হবে। তবে গ্রামীণ বা অনগ্রসর অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৪.৮৩ ধার্য করা হয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—চতুর্থ বিষয় বাদ দিয়ে মূল বিষয়গুলোর জিপিএ বিবেচনায় নেওয়া হবে।
সরকারি বৃত্তি ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে যারা বৃত্তি পাচ্ছেন, তারা এই বৃত্তির জন্য যোগ্য বলে গণ্য হবেন না। অর্থাৎ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এই সহায়তা শুধুমাত্র তাদের জন্য, যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং কোনো বেসরকারি সহায়তা পান না।
গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এই বৃত্তিতে প্রান্তিক ও গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার নিশ্চিত করেছে। মোট বৃত্তির ৯০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে গ্রামীণ বা অনগ্রসর এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য। একই সঙ্গে নারীদের শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে মোট বৃত্তির ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে মেয়েদের জন্য। এটি সমাজে শিক্ষার সমতা ও নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদন প্রক্রিয়া
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক শিক্ষাবৃত্তি ২০২৫-এর জন্য আবেদন করতে হলে শিক্ষার্থীদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট স্ক্যান করে অনলাইনে জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর একটি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবির স্ক্যান কপি আবশ্যক। পাশাপাশি, মা এবং বাবার পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি সংযুক্ত করতে হবে। এছাড়া এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরপত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত প্রশংসাপত্রের স্ক্যান কপিও আপলোড করতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইন-ভিত্তিক এবং নির্ধারিত আবেদন লিংকের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে এসব কাগজপত্র যথাযথভাবে জমা দিতে হবে। আবেদন করার সময় শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ও যোগাযোগের ঠিকানা সঠিকভাবে প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন ও যাচাই-বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা
ডাচ্-বাংললা ব্যাংক শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে এবং এটি চলবে আগামী ৬ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন জমা দিতে না পারলে শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা ২৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে প্রকাশ করা হবে। তালিকায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি, প্রাথমিক নির্বাচনী চিঠি (Primary Selection Letter) ও সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে ২৬ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের যেকোনো শাখা বা মোবাইল ব্যাংকিং অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করতে হবে। এই সময়সীমার বাইরে কেউ যাচাইয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক শিক্ষাবৃত্তি ২০২৫ একটি অসাধারণ উদ্যোগ, যা বাংলাদেশের মেধাবী ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য সত্যিকারের সহায়তা হিসেবে কাজ করবে। এই বৃত্তি শুধু টাকা নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস, অনুপ্রেরণা এবং ভবিষ্যতের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে। তাই যোগ্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করে এই সুযোগটি কাজে লাগানো উচিত।
No comments:
Post a Comment